সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২:৪৩ পূর্বাহ্ন
ঝালকাঠি প্রতিনিধিঃ
বিএনপির ডাকা অবোরোধ বিরোধী মহরা ও তফসিল ঘোষণার সমর্থনে ঝালকাঠিতে যুবলীগের দুই গ্রুপ আলাদা আলাদা নৌকার মিছিল করার সময় পিস্তল, ধারালো অস্ত্র ও লাঠিসোটা নিয়ে করা সংঘর্ষে অন্তত ১০জন আহত ও ১০টি মোটরসাইকেল ভাঙচুর করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১৬ নভেম্বর) সকাল নয়টার দিকে শহরের পোষ্ট অফিস সড়কে এ ঘটনা ঘটে। এ সময় জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ও যুবলীগ নেতা সৈয়দ মিলনসহ চারজনকে গুরুতর অবস্থায় বরিশাল শেবাচিমে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।বিষয়টি নিশ্চিত করছেন ঝালকাঠি সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি নাসির উদ্দিন সরকার।
এক পক্ষের আহতরা হলেন আহতরা হলেন, পৌরসভার ডাক্তারপট্টি এলাকার দেলোয়ার হোসেন এর ছেলে জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি সৈয়দ মিলন (৪০), বিকনা এলাকার লিয়াকত আলীর ছেলে ঝালকাঠি সরকারী কলেজ ছাত্র লীগের সাবেক সভাপতি তরিকুল ইসলাম অপু (৩৫), ইছানিল এলাকার মনতাজ উদ্দিন এর ছেলে ধানসিঁড়ি ইউনিয়ন শ্রমিক লীগের সহ-সভাপতি হারুন হাওলাদার (৬০), বিকনা এলাকার মুজিবুর রহমান এর ছেলে মো. সাগর (৩০) ও নয়ন। অপর পক্ষের আহতরা হলেন যুবলীগকর্মী মো. মামুন (৩৫), আব্দুল জলিল (৪০) ও ছাত্রলীগকর্মী শফিকুল ইসলাম (২৬)।
ঝালকাঠি সদর উপজেলার ধানসিড়ি ইউনিয়ন শ্রমিক লীগের সহ-সভাপতি হারুন হাওলাদার জানান, জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ও বর্তমানে জেলা যুবলীগের যুগ্ম আহবায়ক সৈয়দ হাদিসুর রহমান মিলনের সঙ্গে পদ নিয়ে একই সংগঠনের যুগ্ম আহ্বায়ক রেজাউল করিম জাকির ওরফে জিএস জাকির ও কামাল শরীফের দ্বন্দ্ব হয়। এ নিয়ে তাদের মধ্যে বিরোধ রয়েছে। সকালে সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করায় তারা মোটর সাইকেল নিয়ে ঝালকাঠি পৌর শহরে মহড়া ও আনন্দ করছিলেন। ঝালকাঠি ফায়ার সার্ভিসের পশ্চিম পাশে এসে পৌছালে জিএস জাকির ও কামাল শরীফের নেতৃত্বে পিস্তল, অস্ত্র ধারালো, জিআই পাইপ ও লাঠিসোটা নিয়ে হামলা করা হয়। হামলাকারীরা গুলি করে, পিটিয়ে ও কুপিয়ে তাদের অন্তত ১০ জনকে আহত করে। এর মধ্যে গুরুতর আহত হয়েছেন তিনিসহ (হারুন) যুবলীগ নেতা সৈয়দ মিলন, সাবেক ছাত্রলীগ নেতা অপু, সাগর, নয়ন ও রবিউল। এ ঘটনায় ঝালকাঠি শহরে থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। কোন ধরনের অপ্রিতিকর পরিস্থিতি এড়াতে পুলিশ শহরে টহল দিচ্ছে।
সৈয়দ মিলনের স্ত্রী মারিয়া ইসলাম বলেন, তার স্বামীসহ নেকার্মীরা সরকারের পক্ষে আনন্দ মিছিল করছেন। হামলাকারী প্রকাশ্যে স্বামীকে হত্যার উদ্দেশে গুলি করাসহ পিটিয়ে ও কুপিয়ে জখম করেছে। তিনি ঘটনায় প্রধানমন্ত্রীর কাছে বিচার চেয়েছেন।
আহত সাগর জানান, সৈয়দ মিলনকে জেলা যুবলীগের যুগ্ম আহবায়ক করায় জিএস জাকির ও কামাল শরীফরা মানে না। তারা বিএনপির লোকজন নিয়ে রাজনীতি করে। এ নিয়ে জিএস জাকির ও কালাম শরীফের সঙ্গে সৈয়দ জাকিরের বিরোধ রয়েছে। এর জেরে তাদের বহরে হামলা করা হয়েছে। হামলাকারীরা গুলি করাসহ বেধরকভাবে পিটিয়েছে ও কুপিয়েছে। বহরের অন্তত ১০টি মোটরসাইকেল ভাঙচুর করা হয় এবং সৈয়দ মিলনের রানে গুলি লেগেছে।
জেলা যুব লীগের আহবায়ক রেজাউল করিম জাকির অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, শহরের গোরস্থান এলাকা থেকে এসে ১০ থেকে ১২টি মোটরসাইকেল পিছনে প্রবেশ করে। এ সময় কৃষ্ণকাঠি এলাকার বাসিন্দা আওয়ামী লীগ নেতা জলিলের মোটর সাইকেল দূর্ঘটনার শিকার হয়।
মিলনের সমর্থকরা তাদের মহড়ার পেছন দিক থেকে হামলা করে দুইজন স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতাকে আহত করে। এর পরে সংঘর্ষ বেঁধে যায়। দুই পক্ষের সংঘর্ষে কয়েকজন আহত হয়েছে। খবর পেয়ে তিনি যাওয়ার আগে প্রশাসন গিয়েছে।
এ ব্যাপারে ঝালকাঠি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নাসির উদ্দিন সরকার জানান, ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি সৈয়দ মিলনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বরিশাল শেবাচিমে প্রেরন করা হয়েছে। কারা এ ঘটনা ঘটিয়েছে তা তদন্ত করা হচ্ছে। এখনো কোন পক্ষ অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।